আশুরা সংকলন(ইমাম হোসাইন আ. এর আন্দোলনের দর্শন ও শিক্ষা)
![আশুরা সংকলন(ইমাম হোসাইন আ. এর আন্দোলনের দর্শন ও শিক্ষা)](/_next/image?url=https%3A%2F%2Fback.islamic-sources.com%2Fbn%2Fwp-content%2Fuploads%2F2022%2F10%2FPages-from-ashura-shankalon_final.jpg&w=750&q=75)
আশুরা সংকলন(ইমাম হোসাইন আ. এর আন্দোলনের দর্শন ও শিক্ষা)
প্রকাশক :
প্রকাশকাল :
2009
প্রকাশনার স্থান :
ঢাকা, বাংলাদেশ
(0 ভোট)
![QRCode](https://back.islamic-sources.com/bd/wp-content/uploads/barcodes/3724.png)
(0 ভোট)
আশুরা সংকলন(ইমাম হোসাইন আ. এর আন্দোলনের দর্শন ও শিক্ষা)
এ বইটি ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আন্দোলনের বিশ্লেষণ এবং আশুরার ঘটনাবলী ও শিক্ষা সম্পর্কে একটি সংকলন যা ঢাকাস্থ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলরের দফতরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল আহলে বাইত প্রেমীর উদ্দেশ্যে নিবেদেন করা হলো যাতে তা তাদের মহান আল্লাহ অভিমুখে পূর্ণতার যাত্রা পথে আলোকবর্তিকা হয় ইনশাল্লাহ।
ভূমিকা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
সালাম ও দরুদ বর্ষিত হোক ইসলামের মূর্ত প্রতীক ও একত্ববাদের স্বতঃপ্রকাশিত সারসত্যের ওপর ,যিনি স্রষ্টার সম্মুখে ইবাদাত বন্দেগী করার স্বরূপ ও পদ্ধতিকে স্পষ্ট করে বাৎলে দিয়েছেন। আর ইসলাম ও কুরআনের পতাকাতলেই এই ইসলামকে ধ্বংস করার যে কুফরী ও শিরকী চক্রান্ত তার বিরুদ্ধে যিনি সংগ্রাম করেছেন এবং সত্যিকার একত্ববাদকে তুলে ধরেছেন।
সালাম ও দরুদ বর্ষিত হোক প্রেমবৃত্তির মহান নেতার ওপর যিনি মাশুকের মুহাববাতে কিভাবে ইশকের লালন করতে হয় এবং কিভাবে প্রেমের পথে প্রাণ পণ করতে হয় আর মাশুকের সান্নিধ্য লাভ করতে কিভাবে আত্মত্যাগ করতে হয় ,তা প্রেমভক্তি ও ভালোবাসার গলির সকল বাসিন্দাকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন।
শহীদদের নেতা হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) বলেন :‘ যেদি মুহাম্মাদ (সা.)-এর ধর্ম আমার নিহত হওয়া ছাড়া টিকে না থাকে তাহলে এসো হে তারবারী! নাও আমাকে।’ নিঃসন্দেহে কারবালার মর্ম বিদারী ঘটনা হলো মানব ইতিহাসের দীর্ঘ পরিক্রমক্কায় ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় । এটা এমন এক বিস্ময়কর ঘটনা ,যার সামনে বিশ্বের মহান চিন্তাবিদরা থমকে দাড়াতে বাধ্য হয়েছেন ,পরম বিস্ময়ে আভিভূত হয়ে স্তুতি-বন্দনায় মুখরিত হয়েছেন এ নজিরবিহীন আত্মত্যাগে। কারণ ,কারবালার কালজয়ী বিপ্লবের মহানায়করা‘ অপমান আমাদের সয়না’ -এ স্লোগান ধ্বনিত করে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য হাতে গোনা কয়েকজন হওয়া সত্বেও খোদায়ী প্রেম ও শৌর্য়ে পূর্ণ টগবগে অন্তর নিয়ে জিহাদ ও শাহাদাতের ময়দানে আবির্ভূত হন এবং প্রতারণা ও প্রবঞ্চনার অধঃজগতাকে পেছনে ফেলেউর্ধ্ব জগতে মহান আল্লাহর সনে পাড়ি জমান। তার স্বীয় কথা ও কাজের দ্বারা জগতবাসীকে জানিয়ে দিয়ে যান যে ,‘‘ যে মৃত্যু সত্যের পথে হয় ,তা মধুর চয়েও সুধাময়।’’
বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমানের জীবনপটে যেমন ,তেমনি তাদের পবিত্র বিশ্বাসের পাদমূলে আশুরার সঞ্জীবনী ধারা প্রবাহমান। কারবালার আন্দোলন সুদীর্ঘ চৌদ্দশ’ বছর ধরে স্বচ্ছ-সুগভীর বারিধারা দ্বারা প্রাণসমূহের তৃষ্ণা নিবারণ করে এসেছে । আজ অবধি মূল্যবোধ ,আবেগ ,অনুভূতি ,বিচক্ষপূর্ণতা ও অভিপ্রায়ের অজস্র সূক্ষ্ণ ও স্থুল বলয় বিদ্যমান যা এই আশুরার অক্ষকে ঘিরে আবর্তনশীল । প্রেমের বৃত্ত অঙ্কনের কাটা-কম্পাস হলো এ আশুরা।
নিঃসন্দেহে এ কালজয়ী বিপ্লবের অন্তঃস্থ মর্মকথা এবং এই চেতনা ,লক্ষ ও শিক্ষা একটি সমৃদ্ধশালী ,নিখাদ ও প্রেরণাদায়ক সংস্কৃতি গঠন করে। প্রকৃত ইসলামের সুবিস্তৃত অঙ্গনে এবং আহলে বাইতের সুহৃদ ভক্তকুল ,ছোট-বড় ,জ্ঞানী-মুর্খ নির্বিশেষে সর্বদা এ আশুরা সংস্কৃতির সাথেই জীবনযাপন করেছে ,বিকশিত হয়েছে এবং এ জন্য আত্মাহুতি দিয়েছে। এ সংস্কৃতির চর্চা তাদের জীবনে এতদূর প্রসারিত হয়েছে যে ,জন্মক্ষণে নবজাতককে তারা সাইয়্যেদুশ শুহাদার তুরবাত (কারাবালার মাটি) ও ফোরাতের পানির স্বাদ আস্বাদেন করায় এবং দাফনের সময় কারবালার মাটি মৃতের সঙ্গে রাখে। আর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি হোসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও ভক্তি পোষণ করে ,ইমাধ্যমের শাহাদাতের জন্য অশ্রুপাত করে । আর এই ভালোবাসা শৈশবে দুধপানের সাথে প্রবেশ করে আর শেষ নিশ্বাস ত্যাগের সাথে নিঃসরিত হয়ে যায়।
কারবালার আন্দোলন সম্পর্কে অদ্যবধি অসংখ্য রচনা ,গবেষণা এবং কাব্য রচিত হয়েছে। সূক্ষ চিন্তা ও ক্ষুরধার কলমের অধিকারী যারা ,তারা বিভিন্ন প্রেক্ষাপট ও নানান দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ কালজয়ী বিপ্লবের বিশ্লেষণ করেছেন। এ সকল রচনাকর্ম যদি একত্র করা হয় তাহলে তা পরিণত হবে এক মহাগ্রন্থাগারে। কিন্তু তবুও এ সম্পর্কে নব নব গবেষণা ও ভাবনার । অঙ্গন এখনো রয়ে গেছে।
সুধী পাঠক! এ মুহূর্তে যে বইখানি আপনার হাতে ,এটা ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আন্দোলনের বিশ্লেষণ এবং আশুরার ঘটনাবলী ও শিক্ষা সম্পর্কে একটি সংকলন যা ঢাকাস্থ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলরের দফতরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল আহলে বাইত প্রেমীর উদ্দেশ্যে নিবেদেন করা হলো যাতে তা তাদের মহান আল্লাহ অভিমুখে পূর্ণতার যাত্রা পথে আলোকবর্তিকা হয় ইনশাল্লাহ।
এখানে অত্যন্ত জরুরী মনে করছি আমার সহকর্মী ও প্রিয়ভাজন যারা এ সংকলন প্রস্তুত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে এবং সে সাথে তাদের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করছি।
মোহাম্মদ আওরায়ী কারিমী
কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাস ,ঢাকা ,বাংলাদেশ
১ মুহররম ,১৪৩১ হিঃ