বিস্ময়কর কুরআন:গ্যারি মিলার: পর্ব-৩

মিথ্যা প্রমাণের পরীক্ষা (Falsification Test) আগামীতে যদি কারো সাথে আপনার ইসলাম নিয়ে তর্ক হয় আর সে যদি বলে তার কাছেই রয়েছে সত্য এবং আপনি অন্ধকারে রয়েছেন তবে আপাতত সব যুক্তি ছেড়ে এ পরামর্শটি গ্রহণ করুন। তাকে প্রশ্ন করুন, “আপনার ধর্মে কি কোন ’মিথ্যা প্রমাণের পরীক্ষা’ (Falsification Test) আছে?, আপনার ধর্মে (আমার মতে যেকোন মতবাদের কথাও বলাও যায় যেমন কমিউনিজম- ব্লগার কাম অনুবাদক) কি এমন কিছু আছে যা আপনাকে ভুল প্রমাণ করবে যদি আমি সেটার অস্তিত্ব দেখাতে পারি”। হ্যাঁ, আমি নিশ্চিতরূপে বলতে পারি সে কিছুই দেখাতে পারবেনা-না কোন পরীক্ষা, না কোন প্রমাণ-কিছুইনা। কারণ তাদের মনে এ ভাবনাই কাজ করেনা যে তারা নিজেরা যেটা বিশ্বাস করে সেটা উপস্হাপন করার পাশাপাশি সেটাকে ভুল প্রমাণ করার সম্ভাবনাও রাখবে। কিন্তু ইসলাম এমনটি করে। ইসলামযে মানুষকে এর নির্ভুলতা যাচাই করবার সুযোগ দেয় এর একটি চমৎকার উদাহর‌ণ হচ্ছে ৪র্থ সুরার ‘পারলে একে ভুল প্রমাণ কর’ কথাটি। সত্যি বলতে, আমি সর্বপ্রথম এ চ্যালেণ্জটি দেখে খুবই অভিভূত হই। এখানে বলা আছে (সুরা নিসা, ৪:৮২)- ”তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করেনা?, যদি এটা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত তাহলে তারা এতে অনেক অনঙ্গতি খুঁজে পেত” এটা অমুসলিমদের প্রতি এক সুস্পষ্ট চ্যালেন্জ। মূলত, এটা তাকে একটা ত্রুটি বের করবার চ্যলেন্জ দিচ্ছে। চ্যলেন্জটি গুরুত্বর এবং দুঃসাধ্যতো বটেই, পাশাপাশি এমন চ্যলেন্জের সত্যিকারের উপস্হাপন মানব প্রকৃতির সাথে খাপ খায়না এবং এটা মানবীয় ব্যক্তিত্বের সাথে অসমান্জস্যপূর্ণ। কেউ এমন কোন পরীক্ষা দেয়না যেখানে পরীক্ষার শেষে নিরীক্ষকের উদ্দেশ্যে লিখবে যে ‘এ পরীক্ষাটা স্বয়ংসম্পূর্ণ, এতে কোন ভুল নেই, পারলে একটা বের করুননা!” কোন মানুষই এমনটি করেনা। একটা ভুল না পাওয়া পর্যন্ত ঐ শিক্ষক ঘুমাবেনা। তারপরেও এ পদ্ধতিতেই কুরআন মানুষকে আহবান জানায়। যারা জানে তাদেরকে জিজ্ঞেস করো!! কুরআনে বারবার উল্লিখিত আরেকটি মজার আচরণ হচ্ছে পাঠককে দেওয়া উপদেশাবলি। কুরআন এর পাঠককে বিভিন্ন তথ্যাদি দেয় এবং পরে উপদেশ দেয় ‘তুমি যদি এ সর্ম্পকে আরো জানতে চাও অথবা যা বলা হলো তা যদি সন্দেহ করো তাহলে জ্ঞানবানদের জিজ্ঞেস করে দেখো।" এটাও বিস্ময়কর আচরণ। এমনটাও হওয়া স্বাভাবিক নয় যে এমন একজন লোক যার উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, ভূগোল ইত্যাদিতে কোন প্রশিক্ষণ নেই সে একটি বইয়ে এ বিষয়গুলো আলোচনা করবে এবং পরে পাঠকদের সন্দেহ হলে বিশেষজ্ঞদের কাছে জিজ্ঞেস করে নেবার উপদেশ দিবে। এরপরেও প্রত্যেক যুগেই এমন মুসলিম ছিল যারা কুরআনের উপদেশ মেনেছে এবং বিস্ময়কর সব আবিষ্কার করেছে। কেউ যদি অনেক শতাব্দী আগের বইগুলো দেখে তাহলে সেগুলোতে কুরআনের অসংখ্য উদ্ধৃতি দেখতে পাবে। তাদের বইগুলো থেকে জানা যায় তারা কোনকিছুর জন্যে অমুক জায়গায় অনুসন্ধান চালিয়েছিল। এবং তারা নিশ্চিত করে বলেছে যে তারা অমুক অমুক জায়গায় খোঁজ করেছিল এজন্যে যে কুরআন সেদিকে নির্দেশনা দিয়েছিল। উদাহরণস্বরুপ, কুরআন মানুষের উৎপত্তির উল্লেখ করেছে এবং বলেছে 'এটা নিয়ে গবেষণা কর’। এটা পাঠককে কোথায় দেখতে হবে তার একটা সূত্র দিচ্ছে এবং পরে বলছে যে এটা নিয়ে আরো বিস্তারিত খোঁজাখুজি করা উচিৎ। দেখা যাচ্ছে, এই বিষয়টাকে মুসলিমরা ইদানিং বেশ উপেক্ষা করে যাচ্ছে - কিন্তু সবসময় করেনি যেমনটা দেখাব পরবর্তী উদাহরণগুলোতে। [পরবর্তী পর্বে: ভ্রুণবিদ্যা নিয়ে আলোচনা] (সুত্র: truth-on-top.blogspot.com)