সূরা রা'দের ১২-১৩ নং আয়াতের অর্থসহ সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

এই সূরার ১২ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ "তিনিই তোমাদেরকে বিজলী দেখান -যা ভয় ও ভরসা সঞ্চার করে এবং তিনি সৃষ্টি করেন ঘন মেঘ। বজ্র নির্ঘোষ ও ফেরেশতারা সভয়ে তাঁর সপ্রশংস মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তিনি বজ্রপাত করেন এবং যাকে ইচ্ছা তা দিয়ে আঘাত করেন, তারপরও তারা আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে। যদিও তিনি মহাশক্তিশালী।" বজ্রপাত এবং আকাশে মেঘের গর্জন মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার করলেও প্রকৃতপক্ষে তা আল্লাহর নেয়ামত বা অনুগ্রহের বার্তাই বহন করে। কারণ এর মাধ্যমেই বৃষ্টিপাতের সূচনা হয়। আর এই বৃষ্টির পানিই বৃক্ষ-তরুলতা এবং মানুষ ও জীবজন্তু বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান উপকরণ। বজ্র নিনাদ বা মেঘের গর্জন প্রকৃতিরই নিয়ম। মহান আল্লাহই প্রকৃতির জন্য এই নিয়ম নির্ধারণ করেছেন। পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে বজ্র নিনাদের মাধ্যমে প্রকৃতি মহান আল্লাহর একচ্ছত্র আধিপত্য, তাঁর পরিপূর্ণতা এবং মহিমা বর্ণনা করে থাকে। এছাড়া মেঘমালা সৃষ্টি এবং বৃষ্টিপাত ঘটানোর দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতারা মেঘের গর্জনের ফলে সৃষ্ট আতংকে আরো বেশি আল্লাহর মহিমা কীর্তন করে। এ সবই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় সংঘটিত হয়, তাঁর ইচ্ছা ব্যতিত বজ্রপাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। প্রকৃতির এসব নিদর্শন প্রত্যক্ষ করার পরও অবিশ্বাসী কফেররা কিভাবে সৃষ্টকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে! এবং এ নিয়ে অযথা বিতর্কে লিপ্ত হয়। প্রকৃতির নিয়মেই আকাশে বিদ্যুত চমকায় এবং মেঘের গর্জন শোনা যায়, তবে অনেক ক্ষেত্রে ঐশী শাস্তি হিসেবে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। পবিত্র কোরআনে সামুদ গোত্র প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, তাদেরকে বজ্রপাতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছে যখনি আকাশে বিদ্যুত চমকাতো এবং মেঘের গর্জন শুরু হত তখনি নবী করিম (সা) দোয়া এবং এবাদতে মশগুল হতেন। যাই হোক প্রকৃতিও যে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা কির্তন করে পবিত্র কোরআনে তা বিভিন্ন আঙ্গিকে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে অধিকাংশ মানুষই তা উপলব্ধি করতে পারে না। এই আয়াত থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে এই বিশ্ব প্রকৃতিই স্রষ্টার অস্তিত্বের বড় প্রমাণ। কাজেই যে যত বেশি প্রকৃতিকে জানবে তার ইমান বা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ততই মজবুত হবে।

সম্পর্কিত শিরোনাম