“হে মুমিনগন, আল্লাহকে ভয় কর, তার নৈকট্য অন্বেষন কর, এবং তার পথে জেহাদ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।”
“হে মুমিনগন, আল্লাহকে ভয় কর, তার নৈকট্য অন্বেষন কর, এবং তার পথে জেহাদ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।”
0 Vote
127 View
আল মায়ীদা রুকু;-৬ আয়াত;-৩৫-৪৩ কোরানের কথা-৯৮ আলোচ্য রুকুটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের আহবান ও চুরির অপরাধে ইসলামী বিধান অনুযায়ী জাগতীক শাস্তীর কথা নিয়ে আসছে। ৩৫/يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَابْتَغُواْ إِلَيهِ الْوَسِيلَةَ وَجَاهِدُواْ فِي سَبِيلِهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ অর্থাৎ;-হে মুমিন গন, আল্লাহকে ভয় কর, তার নৈকট্য অন্বেষণ কর এবং তার পথে জেহাদ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। ৩৬/إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُواْ بِهِ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ অর্থাৎ;-যারা কুফরী করেছে, যদি তাদের কাছে দুনিয়ার সমুদয় সম্পদ থাকে, এবং তার সাথে সমপরিমান আরও থাকে, আর এ গুলোর বিনিময়ে কেয়ামতের দিন শাস্তি থেকে পরিত্রান পেতে চায়, তবুও তাদের কাছ থেকে তা কবুল করা হবেনা। তাদের জন্য যন্ত্রনা দায়ক শাস্তি রয়েছে। যে গোনাহ মাফ করিয়ে নেবার সুযোগ রয়েছে তা জীবিত অবস্থায় তওবার মাধ্যমে মাফ না করিয়ে মৃত্যু বরণ করলে, তা দুনিয়ার অফুরন্ত সম্পদের বিনিময়েও শোধ করা যাবেনা। কেয়ামতের বিচারে তাকে শাস্তি ভোগ করতেই হবে। ৩৭/يُرِيدُونَ أَن يَخْرُجُواْ مِنَ النَّارِ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنْهَا وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ অর্থাৎ;-তারা দোজখের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে, কিন্তু তা থেকে বের হতে পারবেনা। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে।। ৩৮/وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُواْ أَيْدِيَهُمَا جَزَاء بِمَا كَسَبَا نَكَالاً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ অর্থাৎ;-পুরুষ চোর আর নারী চোর, তাদের হাত কেটে দাও, তাদের কৃতকর্মের সাজা। পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময় আল্লাহর তরফ হতে ভয়াবহ সাজা। ইসলামী বিধান অনুযায়ী চোর পুরুষ হোক কিংবা নারী। উভয়েই সম পরিমান দোষী। শাস্তি স্বরূপ উভয়েরই হাত কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আয়াতে ‘নাকালান’ হল ভয়াবহ শাস্তি। ইসলামী শরিয়তে কঠোর শাস্তি গুলোকে প্রকাশ্যে কার্যকরি করার বিধান দেওয়া হয়েছে। বিচারে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করতে সন্দেহের অবকাশ থাকলে তার ফল প্রচলিত আইনের মত আসামীর পক্ষে যাবে। তবে সাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর কঠোর শাস্তি গুলো প্রকাশ্যে ঘটাতে হবে। যাতে একের সাজায় অনেকের চোখ খুলে যায়। বিজ্ঞ সমাজপতিরা এ হেন শাস্তির সমালোচনা করে বলেন, এমন সমাজ গড়তে হবে যাতে কারও চুরীর প্রয়োজন না হয়। অতি উত্তম প্রস্তাব। কিন্তু মনে রাখতে হবে অভাবের তাড়নায় শুধু মানুষ চুরী করে তা নয়। তা ছাড়া আল্লাহর বিধান কারও রদ করার ক্ষমতা নেই। নিরাপরাধকে শাস্তি দেবারও বিধান নেই। ৩৯/فَمَن تَابَ مِن بَعْدِ ظُلْمِهِ وَأَصْلَحَ فَإِنَّ اللّهَ يَتُوبُ عَلَيْهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ অর্থাৎ;-আর যে নিজের অপরাধ বুঝে তওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে। নিশ্চয় আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।৪০/أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ يُعَذِّبُ مَن يَشَاء وَيَغْفِرُ لِمَن يَشَاء وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ অর্থাৎ;-তুমিকি জাননা! আসমান ও জমিনের মালিকানা আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন, যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। আল্লাহ সব বিষয়ে শক্তিমান। তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিয়ে থাকেন আবার যাকে ইচ্ছা মাফ করে দিতেও পারেন। সর্বময় কর্তৃত্ব তারই। ৪১/يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ لاَ يَحْزُنكَ الَّذِينَ يُسَارِعُونَ فِي الْكُفْرِ مِنَ الَّذِينَ قَالُواْ آمَنَّا بِأَفْوَاهِهِمْ وَلَمْ تُؤْمِن قُلُوبُهُمْ وَمِنَ الَّذِينَ هِادُواْ سَمَّاعُونَ لِلْكَذِبِ سَمَّاعُونَ لِقَوْمٍ آخَرِينَ لَمْ يَأْتُوكَ يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ مِن بَعْدِ مَوَاضِعِهِ يَقُولُونَ إِنْ أُوتِيتُمْ هَـذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمْ تُؤْتَوْهُ فَاحْذَرُواْ وَمَن يُرِدِ اللّهُ فِتْنَتَهُ فَلَن تَمْلِكَ لَهُ مِنَ اللّهِ شَيْئًا أُوْلَـئِكَ الَّذِينَ لَمْ يُرِدِ اللّهُ أَن يُطَهِّرَ قُلُوبَهُمْ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ অর্থাৎ;-হে রসুল তাদের জন্য দুঃখ করবেন না, যারা দ্রুত কুফরীর দিকে ধাবিত হয়। তাদের মধ্যে যারা মুখে বলে, আমরা ইমান এনেছি, অথচ তাদের অন্তর ইমান আনেনি, তাদের মধ্যে যারা ইহুদী, মিথ্যা বাদী বা এমন কওমের জন্য শোনে যারা আপনার কাছে আসেনা। তারা আল্লাহর কালামকে বিকৃত করে তা যথা স্থানে থাকার পরও। তারা বলে যদি তোমাদের এমন ফায়সালা দেওয়া হয় তবে তা গ্রহন করবে। আর যদি তা না হয় তবে পরিত্যাগ করবে। আল্লাহ যাকে ফেৎনায় ফেলতে চান, তাদের জন্য আপনি কিছু করতে পারবেন না। এরা এমন লোক যাদের অন্তরকে আল্লাহ পবিত্র করতে চান না। তাদের জন্য দুনিয়ায় রয়েছে লাঞ্ছনা আর পরকালে কঠীন শাস্তি। এখানে কিছু নাটের গুরুদের কথা বলা হয়েছে, যারা রসুলের দরবারে আসত না তবে তাদের বিশ্বস্থ চর পাঠাত, রসুলের দরবারের খবা খবর সংগ্রহের জন্য। এমনকি কোন সমস্যার বিচার প্রার্থী রূপেও লোক পাঠাত, তবে তাদের আগাম বলে দেওয়া হত তাদের পক্ষে রায় হলে মানবে নচেৎ কেস তুলে নিয়ে চলে আসবে। মনে রাখতে হবে, মদীনায় ইসলামী শাসন ব্যবস্থা, মক্কা বিজয়ের পরই স্থাপিত হয়ে ছিল। তার আগে যার ইচ্ছে সে নবীর দরবারে বিচার প্রার্থী হত, যার ইচ্ছা ইহুদী ওলামাদের দরবারে যেত। নয়ত একই রাষ্ট্রে দু ধরণের বিচার ব্যবস্থা চলতে পারেনা। ৪২/سَمَّاعُونَ لِلْكَذِبِ أَكَّالُونَ لِلسُّحْتِ فَإِن جَآؤُوكَ فَاحْكُم بَيْنَهُم أَوْ أَعْرِضْ عَنْهُمْ وَإِن تُعْرِضْ عَنْهُمْ فَلَن يَضُرُّوكَ شَيْئًا وَإِنْ حَكَمْتَ فَاحْكُم بَيْنَهُمْ بِالْقِسْطِ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ অর্থাৎ;-এরা শোনে মিথ্যা বলার জন্যে, ভক্ষন করে হারাম। অতএব তারা যদি আপনার কাছে আসে, তবে হয় তাদের ফায়সালা করে দেবেন নয় তাদের ব্যাপারে নির্লীপ্ত থাকুন। তবে তারা আপনার বিন্দু মাত্র ক্ষতি করতে পারবেনা। আর যদি বিচার করেনই তবে ন্যায় বিচার করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচার কারীদেরকে ভালবাসেন।। গুপ্তচর বৃত্তি করার জন্য যারা হজুরের দরবারে আসত বা পাঠানো হত, তারা হারাম খাওয়ায় ওমিথ্যা বলায় অভ্যস্থ ছিল। তারা নাটের গুরুদের কাছে বলার জন্য যথেষ্ট মনযোগ দিয়ে শুনতো। তারা পূর্ব নিজেদের ধার্যকৃত রায় নেবার জন্য হুজুরের দরবারে আসত বলে, আল্লাহ তায়ালা রসুল সঃ কে বললেন, তাদের কেস নিতে চাইলে নিন অথবা প্রত্যাখ্যান করুন। রসুল সঃ ভাবতেন, যদি তিনি কেস না নেন তবে তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রীয়া হতে পারে। আল্লাহ বললেন, তারা আপনার কিছুই বিগড়াতে পারবে না। ৪৩/وَكَيْفَ يُحَكِّمُونَكَ وَعِندَهُمُ التَّوْرَاةُ فِيهَا حُكْمُ اللّهِ ثُمَّ يَتَوَلَّوْنَ مِن بَعْدِ ذَلِكَ وَمَا أُوْلَـئِكَ بِالْمُؤْمِنِينَ অর্থাৎ;-আর কেমন করেই বা তারা আপনার কাছে বিচার নিতে আসে! তাদের কাছে তওরাত আছে, তাতে আল্লাহর বিধান রয়েছে। তার পরও তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। তারা বিশ্বাসীই নয়। তাদের বিধি বিধান আল্লাহ তায়ালা তওরাতেও দিয়েছেন। কিন্তু তারা তা হতে সরে এসেছে। আর রসুল সঃ কে বিব্রত করতেই তারা তাঁর দরবারে আসত। মুমিন সেজে এলেও এরা আসলে মুমিন নয়, মিথ্যাবাদী মোনাফেক। লিখেছেন আবদুস সামাদ http://www.shodalap.org/abdus-samad/13509/